চট্টগ্রাম, ২২ নভেম্বর ২০২৫ — জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনের মতো ছোট্ট টং দোকানের পথে রওনা দিয়েছিলেন জালালাবাদের বাসিন্দা দিল মোহাম্মদ। কিন্তু সেদিনের সেই সকাল তার জীবনে নিয়ে আসে এক দুঃস্বপ্ন। বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার পথে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি; ভেঙে যায় তার বাম হাত। পথচারিদের সহায়তায় দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের পরামর্শ দিলেও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তা ছিল তার নাগালের বাইরে। মৃত পিতা এখলাছুর রহমান ও মৃত মাতা ফরিদা খাতুনের এই সন্তান দীর্ঘদিন ধরেই দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে আসছেন। টং দোকানের সামান্য আয়ে সংসার চালানোই যেখানে কঠিন, সেখানে বড় ধরনের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা ছিল প্রায় অসম্ভব। চিকিৎসা ও ওষুধের ক্রমবর্ধমান ব্যয় তাকে একেবারে নিঃস্ব করে দেয়। আশপাশের কিছু মানুষের সহায়তায় চিকিৎসার চেষ্টা চালালেও অপারেশনের খরচ ছিল সবচেয়ে বড় বাঁধা।
নিরুপায় হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের মাধ্যমে তিনি যোগাযোগ করেন শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাঁরি (ক.) ট্রাস্ট পরিচালিত যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড–এর সঙ্গে। মানবকল্যাণে নিবেদিত এই প্রতিষ্ঠান তার অসহায় অবস্থার কথা জানার পর এগিয়ে আসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। দিল মোহাম্মদের অপারেশনের পুরো ব্যয়ভার তুলে নেয় যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড কর্তৃপক্ষ।
মানবিক এই সহায়তার ফলে অবশেষে আজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে তার বাম হাতের অপারেশন। চিকিৎসকদের মতে, যথাযথ পুনর্বাসন ও চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে তিনি খুব দ্রুত সুস্থতার পথে ফিরতে পারবেন।
দিল মোহাম্মদ গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানান—
“যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের কাছে আমি জীবন পেয়েছি। তাদের এই উপকার আমি কখনো ভুলব না।”
এ ঘটনা আবারও প্রমাণ করে—সমাজের প্রত্যেক মানুষ যদি সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসে, তবে অসহায় মানুষের জীবন বদলে যেতে পারে মানবতার উষ্ণতায়। যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের এই উদ্যোগ সমাজে মানবিক মূল্যবোধের একটি আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকবে।

