বেকার, পুঁজিহীন, কর্মক্ষম উদ্যোগী ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা উত্তরণে, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বৈষম্য দূরীকরণ, আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি, দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকারত্ব দূরীকরণে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ট্রাস্ট পরিচালিত দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প এর ব্যবস্থাপনায় ৫৫ জনকে কলের লাঙ্গল ক্রয়ে ৫১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

ট্রলি বানিয়ে গড় মৌসুমে মালামাল বহন করি
কলের লাঙ্গল পেয়েছেন ফটিকছড়ির তকির হাট এলাকার মো. সেলিম উদ্দিন। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান- তরি-তরকারি ও ধান চাষে কাজ করতে-করতে জীবনের অনেকটা সময় পার করেছি। ঘরে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও তিন সন্তান। সন্তানদের লেখাপড়াসহ সবার ভরণ পোষণ যেন একটু কষ্টকর বটে। শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ট্রাস্ট হতে একটি কলের লাঙ্গল পেয়েছি। নিজের জমি-জমা না থাকলেও সংসারে অভাব কাটিয়ে উঠেছি। দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত এ কলের লাঙ্গল দিয়ে আমি শুধু জমির চাষ নয়, ট্রলি বানিয়ে গড় মৌসুমে বিভিন্ন মালামাল বহন করে থাকি। এতে আয়ের পথ আরো সুগম হয়েছে।
(১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, শনিবার) শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ট্রাস্ট পরিচালিত দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প -এর উদ্যোগে সুবিধা বঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সম্মান ও মর্যদাপূর্ণ জীবন- যাপনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কর্মক্ষম উদ্যোগী ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা উত্তরণে দেশব্যাপী আত্মকর্মসংস্থানমূলক সামগ্রী ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান কর্মসুচির অংশ হিসাবে শরিয়তপুর জেলার সখিপুর থানাস্থ তিন জন নারীকে ছাগল পালনে আর্থিক সহায়তা, এক জন দুস্থ চালক’কে ব্যাটারি চালিত রিক্শা ও দুই জনকে কলের লাঙ্গল প্রদান করা হয়।
সখিপুরস্থ তারাবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ভেদেরগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মদ মাসুম বালা । তিনি বলেন, শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভা-ারী (কঃ) ট্রাস্ট বেকার যুবকদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে যুবকদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলছে। এ ট্রাস্ট আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বৈষম্য দূরীকরণ, আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি, দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকারত্ব দূরীকরণে দেশের ব্যাপক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
ভয়রা গজারিয়া হক ভাণ্ডারী দায়রা শরিফের উপদেষ্টা মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, হাফেজ মাওলানা আবুল বশর, দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প পরিচালনা পর্ষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাছের, প্রচার সম্পাদক আহসান উল্লাহ চৌধুরী বিভন, মোহাম্মদ কিবরিয়া চেরাগী, মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন ও মোহাম্মদ হানিফ মাতব্বর প্রমুখ।
দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে দিগন্ত বিস্তৃত আকাশের দিকে দু হাত প্রসারিত করে শামসুল আলম বলেন-শোকর আলহামদুলিল্লাহ্ ।
দুই ছেলের জনক মোহাম্মদ শামসুল আলম (পিতা: মৃত আবুল কাসেম, আশরাফ নগর,কমলা টিলা,কদলপুর, ০৯ নং ওয়ার্ড, রাউজান,চট্টগ্রাম)। স্বনির্ভরতা অর্জনে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ট্রাস্ট পরিচালিত দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প হতে ২০১৮ সালে তাঁকে একটি কলের লাঙ্গল প্রদান করা হয়েছিল।
ট্রাস্ট থেকে কলের লাঙ্গলটি পাওয়ার পর জীবন-মানের কি পরিবর্তন হয়েছে শামসুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,আমি পেশায় একজন কৃষক ও সিএনজি চালিত ট্যাক্সির ড্রাইভার। ভাড়ায় গাড়ী চালাতাম। সারা দিন গাড়ী চালিয়ে যা আয় হত তার বেশীর ভাগ মালিক’কে দিয়ে দিতে হতো, বাকী যা থাকতো তা দিয়ে সংসারের খরচ চালাতে মাসের শেষে কর্জ করতে হতো । নিজে একটি গাড়ী কিনব-সেই রকম টাকা-পয়সাও ছিলনা।
আমি মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ, কদলপুর শাখার (রাউজান) একজন সদস্য হিসাবে আমার অবস্থার কথা জানিয়ে কমিটির মাধ্যমে ট্রাস্ট বরাবর আবেদন করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমার সাথে সরাসরি কথা বলেন এবং একটি কলের লাঙ্গল ক্রয় করে দেন।
দু’বছর কলের লাঙ্গলটি চালিয়েছি, প্রতি মৌসুমে খরচবাদ দিয়ে ৫০ হাজার টাকা রোজগার করেছি। নিজেও চাষাবাদ করি। কিছু কর্জ ছিল যা ইতোমধ্যে পরিশোধ করেছি। বর্তমানে এক বছরের ধান মজুদ আছে। পরিবারে তেমন একটা অভাব নাই। সবচেয়ে খুশি কথা আমার বড় ছেলে কিছু দিনের মধ্যে হাফেজ হয়ে বের হবে। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে।
বর্তমান অবস্থায় আপনি কি সুখি, প্রশ্ন করা হলে- শামসুল আলম দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে দিগন্ত বিস্তৃত আকাশের দিকে দু হাত প্রসারিত করে বলেন- শোকর আলহামদুলিল্লাহ্ ।












