ডিসেম্বর ৬, ২০২৫

রাউজানের নোয়াজিষপুরে সেলাই প্রশিক্ষণার্থীদের সনদ বিতরণ ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
মানবসেবার মহৎ অঙ্গীকারকে ধারণ করে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট বহু বছর ধরে নীরবে, আন্তরিকতায় ও মমতায় কাজ করে যাচ্ছে মানুষের কল্যাণে। সেই আদর্শ বুকে ধারণ করে যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াজিষপুরে প্রতিষ্ঠিত শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী প্রশিক্ষণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের নতুন জীবনের দিশারী।
এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ৮ম ব্যাচের সেলাই প্রশিক্ষণার্থীদের সনদপত্র বিতরণ এবং ৯ম ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা—দুটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে।
সনদ বিতরণের অনাবিল আনন্দ -সেদিন সকালেই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের প্রাঙ্গণে এক বিশেষ আবহ সৃষ্টি হয়। সাদামাটা সাজসজ্জা, আশাব্যঞ্জক মুখ আর নতুন স্বপ্নে উজ্জ্বল চোখ—সব মিলিয়ে যেন এক মানবিক উপলক্ষের চিত্রপট আঁকা হয়ে ওঠে। ৮ম ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীরা তিন মাসব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে যখন সনদপত্র গ্রহণের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ালেন, তখন তাদের চোখেমুখে ফুটে উঠেছিল আত্মবিশ্বাসের দীপ্ত আলো।
সনদ গ্রহণের মুহূর্তটি কেবল একটি কাগুজে স্বীকৃতি নয়—এটি ছিল তাদের দীর্ঘ চেষ্টা, অধ্যবসায় ও শেখার প্রতি নিষ্ঠার এক সুন্দর প্রতিদান। অনেক প্রশিক্ষণার্থীর হাতে থাকা সনদ যেন তাদের ভবিষ্যতের নতুন পথচলার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। বক্তারা তাদের উৎসাহিত করে বলেন, এই দক্ষতা নারীদের স্বনির্ভরতার দ্বার উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
৯ম ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা—দক্ষতার দৃশ্যমান প্রয়াস– একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় ৯ম ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা। পরীক্ষার সময় প্রশিক্ষণার্থীরা যে মনোযোগ, আন্তরিকতা এবং দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন, তা প্রশিক্ষকদের মনে গভীর তৃপ্তি এনে দেয়। সেলাই মেশিনের শব্দ আর হাতে-কলমে কাজের ধ্বনি মিলিয়ে যেন কর্মময়তার এক সুর বেজে ওঠে পুরো কেন্দ্রে।
পরীক্ষার্থীদের কাজে ফুটে উঠেছিল তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা—কাটিং, প্যাটার্ন তৈরি, সেলাই এবং পোশাক নির্মাণের প্রতিটি ধাপে ছিল তাদের নৈপুণ্যের পরিচয়। প্রশিক্ষকরা আশা প্রকাশ করেন, এ ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও আগামী দিনগুলোতে সমাজে স্বাবলম্বী ও দক্ষ নারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবেন।
নারী উন্নয়নে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভূমিকা– প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় নারীদের কর্মমুখী শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের সহায়তায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীরা ঘরে বসেই আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। অনেকেই ইতোমধ্যে ছোট উদ্যোগ শুরু করেছেন, আবার কেউ কেউ বৃহত্তর পরিসরে কাজের স্বপ্ন দেখছেন। এ উদ্যোগ নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
উপসংহার-রাউজানের নোয়াজিষপুরের এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যেন নারীদের আশার আলো জ্বালানোর এক নীরব প্রদীপ। ৮ম ব্যাচের সনদ বিতরণ ও ৯ম ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়—এটি নারীদের আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম ও স্বপ্নযাত্রার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের সহযোগিতায় নারীর ক্ষমতায়নের এ প্রয়াস ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হোক—এ প্রত্যাশায় অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন আকতার হোসেন, মনজুরুল ইসলাম চৌধুরী, আহসান উল্লাহ চৌধুরী বিভন, কাজী হেলাল উদ্দীন, সৈয়দ মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন ও মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন বাবলু প্রমুখ।
ডিসেম্বর ১, ২০২৫

চট্টগ্রাম, ২২ নভেম্বর ২০২৫ — জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনের মতো ছোট্ট টং দোকানের পথে রওনা দিয়েছিলেন জালালাবাদের বাসিন্দা দিল মোহাম্মদ। কিন্তু সেদিনের সেই সকাল তার জীবনে নিয়ে আসে এক দুঃস্বপ্ন। বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার পথে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি; ভেঙে যায় তার বাম হাত। পথচারিদের সহায়তায় দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের পরামর্শ দিলেও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তা ছিল তার নাগালের বাইরে। মৃত পিতা এখলাছুর রহমান ও মৃত মাতা ফরিদা খাতুনের এই সন্তান দীর্ঘদিন ধরেই দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে আসছেন। টং দোকানের সামান্য আয়ে সংসার চালানোই যেখানে কঠিন, সেখানে বড় ধরনের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা ছিল প্রায় অসম্ভব। চিকিৎসা ও ওষুধের ক্রমবর্ধমান ব্যয় তাকে একেবারে নিঃস্ব করে দেয়। আশপাশের কিছু মানুষের সহায়তায় চিকিৎসার চেষ্টা চালালেও অপারেশনের খরচ ছিল সবচেয়ে বড় বাঁধা।
নিরুপায় হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের মাধ্যমে তিনি যোগাযোগ করেন শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাঁরি (ক.) ট্রাস্ট পরিচালিত যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড–এর সঙ্গে। মানবকল্যাণে নিবেদিত এই প্রতিষ্ঠান তার অসহায় অবস্থার কথা জানার পর এগিয়ে আসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। দিল মোহাম্মদের অপারেশনের পুরো ব্যয়ভার তুলে নেয় যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড কর্তৃপক্ষ।
মানবিক এই সহায়তার ফলে অবশেষে আজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে তার বাম হাতের অপারেশন। চিকিৎসকদের মতে, যথাযথ পুনর্বাসন ও চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে তিনি খুব দ্রুত সুস্থতার পথে ফিরতে পারবেন।
দিল মোহাম্মদ গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানান—
“যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের কাছে আমি জীবন পেয়েছি। তাদের এই উপকার আমি কখনো ভুলব না।”
এ ঘটনা আবারও প্রমাণ করে—সমাজের প্রত্যেক মানুষ যদি সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসে, তবে অসহায় মানুষের জীবন বদলে যেতে পারে মানবতার উষ্ণতায়। যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের এই উদ্যোগ সমাজে মানবিক মূল্যবোধের একটি আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকবে।
নভেম্বর ২১, ২০২৫

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম—নারীস্বাস্থ্য সচেতনতা সেমিনার’ শীর্ষক উন্মুক্ত আলোচনা
নারীর স্বাস্থ্য আমাদের পরিবার, সমাজ ও জাতীয় উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। জন্ম থেকে কৈশোর, প্রজননকাল, মাতৃত্ব, মেনোপজ এবং বার্ধক্য—প্রতিটি ধাপে নারীরা অনন্য কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যান। বয়ঃসন্ধিকালের হরমোনগত রূপান্তর, গর্ভাবস্থার ঝুঁকি, সন্তান জন্মের পর শারীরিক পরিবর্তন, মেনোপজ পরবর্তী জটিলতা—এসব বিষয়ে সঠিক ধারণা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ অনেক সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে। তাই নারীদের জন্য সঠিক স্বাস্থ্যশিক্ষা জোরদার করা এখন সময়ের দাবি।
ঠিক এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখে শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড নিয়মিতভাবে আয়োজন করে আসছে ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম—নারীস্বাস্থ্য সচেতনতা সেমিনার’ শীর্ষক উন্মুক্ত আলোচনার অনুষ্ঠান। এখানে অংশগ্রহণ করেন কিশোরী, নববিবাহিতা, গৃহিণি, কর্মজীবী নারীসহ বিভিন্ন বয়সী নারী।
সেমিনারের অন্যতম আকর্ষণ হলো নারীদের শরীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক বিষয়গুলো নিয়ে মুক্ত আলোচনা। সমাজে প্রচলিত ভুল ধারণা, লজ্জা ও কুসংস্কার অনেক সময় নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যাকে গভীর করে তোলে। বিশেষ করে ঋতুচক্র, প্রজনন স্বাস্থ্য, গর্ভধারণকালীন জটিলতা, মাতৃস্বাস্থ্যবিধি, সন্তান পরিচর্যা, পুষ্টি ও মানসিক সুস্থতা সম্পর্কে অনেকে পর্যাপ্ত তথ্য জানেন না।
এই সেমিনারে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সহজ ভাষায় এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন, পিরিয়ড–সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পরিবার–পরিচর্যার মানসিক চাপ মোকাবিলা, মাতৃকালীন পরামর্শ ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয় বাস্তব উদাহরণসহ। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও সমস্যা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ পান।
নারীরা দীর্ঘদিন ধরে শরীরবৃত্তীয় কোন সমস্যা বা উদ্বেগ নিজেদের মধ্যে চেপে রাখেন—এটি অস্বাভাবিক নয়। সামাজিক সংকোচ, পরিবারের বিদ্যমান রীতি, কিংবা তথ্যের অভাব—সব মিলেই বিষয়গুলো আরও জটিল হয়ে ওঠে। সেমিনারটি নারীদের জন্য যেন একটি নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য জায়গা তৈরি করে দেয়, যেখানে কোন লজ্জা বা সংকোচ ছাড়াই তাঁরা নিজেদের কথা বলতে পারেন।
ফলে অংশগ্রহণকারী নারীদের মনে তৈরি হয় একধরনের মানসিক প্রফুল্লতা, স্বস্তি ও আত্মবিশ্বাস। ভুল ধারণা দূর হওয়ায় তাঁদের মধ্যে তৈরি হয় সচেতনতা, যা ভবিষ্যতে ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার ও সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের অধীনস্থ যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড দীর্ঘদিন ধরে মানবিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। নারীস্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে এ ধরনের নিয়মিত সেমিনার কেবল স্বাস্থ্য–শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমই নয়, বরং সমাজে কুসংস্কারমুক্ত সচেতন নারীর প্রজন্ম গঠনের একটি বাস্তব প্রয়াস।
নারীর স্বাস্থ্য শুধু ব্যক্তিগত নয়; এটি সমাজের সার্বিক উন্নয়নের শর্ত। নারীদের স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন, মাতৃত্বকালীন যত্ন, প্রজনন স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানই পারে একটি সুস্থ, সচেতন ও শক্তিশালী সমাজ গড়ে তুলতে। যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে নারীস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
নভেম্বর ২০, ২০২৫

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় নতুন আশার আলো হয়ে এসেছে “ময়ূরখীল দাতব্য চিকিৎসালয়”
ছবি বাংলাদেশের পার্বত্যাঞ্চলের দুর্গম পাহাড়ি জনপদগুলো দীর্ঘদিন ধরেই মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। ভৌগলিক দূরত্ব, কঠিন যোগাযোগব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী জনবলের ঘাটতি এবং অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে এখানকার মানুষ বিশেষত নারী ও শিশুরা নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হয়। প্রজনন স্বাস্থ্য, মাতৃত্বকালীন সেবা, পুষ্টি, স্বাস্থ্যবিধি ও সচেতনতার অভাব এখানকার জনগোষ্ঠীকে আরও দুর্বল করে তোলে। রোগীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছাতে অনেকসময় পায়ে হেঁটে বা প্রচণ্ড দুর্গম পথ অতিক্রম করে যেতে হয়, যা জরুরি চিকিৎসার ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
এই বাস্তবতায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় নতুন আশার আলো হয়ে এসেছে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রিত যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড এর উদ্যোগ। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার লক্ষীছড়ি ইউনিয়নের দূরবর্তী ময়ূরখীল এলাকায় স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয় “ময়ূরখীল দাতব্য চিকিৎসালয়”।
এই চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হলো—দুর্গম পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় মানসম্মত, নিরাপদ ও মানবিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া।
চিকিৎসালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিয়মিতভাবে এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নিম্নোক্ত সেবাগুলো প্রদান করা হচ্ছে—
সাধারণ রোগব্যাধি, শিশুদের সাধারণ অসুস্থতা, মায়ের স্বাস্থ্য সমস্যা ইত্যাদির জন্য নিয়মিত চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
চোখের ছানি রোগে আক্রান্ত দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চিহ্নিতকরণ, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং অপারেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্থানীয় শিশুদের জন্য নিয়মিতভাবে বিনামূল্যে সুন্নতে খতনা সেবা প্রদান করা হয়—যা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পরিবারগুলোর বড় সহায়তা।
গর্ভধারণকালীন করণীয়, প্রসব-পরবর্তী যত্ন, নবজাতকের পরিচর্যা, মায়ের পুষ্টি ও মানসিক সুস্থতা বিষয়ে নিয়মিত সেমিনার আয়োজন করা হয়।
এছাড়া নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও অজ্ঞতা দূরীকরণেও কার্যকর সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে পুষ্টি ঘাটতি বেশি থাকার কারণে পুষ্টিজনিত সমস্যা প্রতিরোধে বিশেষ সচেতনতা সেশন পরিচালনা করা হয়।
চিকিৎসালয়টি কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার পরিবার এই সেবার আওতায় এসেছে—যা পার্বত্য অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে একটি বড় অর্জন।
ধারাবাহিক চিকিৎসা, বিনামূল্যে ওষুধ এবং নিয়মিত সচেতনতা কার্যক্রম স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে ইতোমধ্যে বাস্তব পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে।
যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড ভবিষ্যতে ময়ূরখীল দাতব্য চিকিৎসালয়ের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিশেষত—
ইনশাআল্লাহ্, নিকট ভবিষ্যতে এই চিকিৎসালয় পুরো অঞ্চলের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ও মানবিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
ময়ূরখীল দাতব্য চিকিৎসালয় শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নয়—এটি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কাছে আশার প্রতীক। শিক্ষা, সচেতনতা এবং সহজলভ্য চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়নে এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় ও মানবিক পদক্ষেপ। যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের এই ধারাবাহিক প্রচেষ্টা পার্বত্যাঞ্চলের স্বাস্থ্যখাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
নভেম্বর ১৯, ২০২৫

দক্ষিণ ধর্মপুর ইসহাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিশোরীদের জন্য বিনামূল্যে নাক ও কান ফোঁড়ানোর ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম):
দক্ষিণ ধর্মপুর ইসহাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিশোরীদের জন্য বিনামূল্যে নাক ও কান ফোঁড়ানোর ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রিত যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড পরিচালিত দরবারে গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারীর গাউসিয়া হক মনজিল চত্বরে স্থাপিত “হোসাইনী দাতব্য চিকিৎসালয়” এ ক্যাম্পটির আয়োজন করেন। এতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ঔষধ ও রিং সরবরাহ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জনাবা জান্নাতুল মাওয়া। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ, শ্যামলা হাট শাখার সভাপতি মুহাম্মদ জামশেদ হোসেন টিপু।
বক্তারা বলেন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা, পুষ্টি ও চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে ‘শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট’ যে সর্বজনীন বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী উদ্যোগ। এ ধরনের সেবামূলক আয়োজন কিশোরীদের সচেতনতা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করবে বলেও মত প্রকাশ করেন তারা।
হোসাইনী দাতব্য চিকিৎসালয়ের কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আনিস উদ্দিন সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ জাহেদুল আলম, মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঐন্দ্রিলা পাল ও সাইরিন আকতার। আরও উপস্থিত ছিলেন শ্যামলা হাট শাখার সহসভাপতি মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ নাঈম উদ্দিন জয়, শাখা উপদেষ্টা এবং সদস্যবৃন্দ।
ক্যাম্পে টেকনিশিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সুবরিন সোলতানা তিশা। তিনি দক্ষতার সাথে নাক–কান ফোঁড়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।
নভেম্বর ১৮, ২০২৫

যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড সমাজের অসহায়, দরিদ্র ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী নারীদের স্বনির্ভরতা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী প্রশিক্ষণকেন্দ্র।
দক্ষনারী উন্নয়নে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানবসেবা ও উন্নয়নের পথকে প্রশস্ত করার লক্ষ্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। এই ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড সমাজের অসহায়, দরিদ্র ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী নারীদের স্বনির্ভরতা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী প্রশিক্ষণকেন্দ্র।
এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো—
নারী উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতা অর্জনে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের এই প্রশিক্ষণ উদ্যোগ একটি সফল ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের সহায়তায় পরিচালিত এই কার্যক্রম শুধু মাত্র সেলাই প্রশিক্ষণ নয়, বরং সমাজের বঞ্চিত নারীদের জন্য একটি সম্মানজনক ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার পথ তৈরি করছে। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
জুলাই ৩১, ২০২৫

অসহায় মানুষদের পাশে সহায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট
সুমি আক্তার (১৯), চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চরম্বার বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন গৃহিণি। পিতৃহীন কন্যা বলে অল্প বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। ২ বছর আগে বিয়ে হলেও স্বামীর উদাসীনতার জন্য এক কন্যা নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। মায়ের সংসারেও অভাব নিত্যসঙ্গী। তার মা তার আরো দুই ভাই বোন নিয়ে থাকেন। পারিবারে আয়ের একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে তার মা । মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে যে টাকা পায় তা দিয়ে কোনোভাবে তাদের সংসার চলে। গত দুইমাস আগে সুমি নিজ ঘরের কাজ করতে গিয়ে দুই পা ভেঙ্গে ফেলেন । মাটির ঘরের দেওয়াল চুপসে তার ক্ষুদ্র শরীরের উপর পড়ায় এমন দুর্ঘটনার শিকার হন। পা ভাঙ্গা নিয়ে তিনি দেড় মাস যাবত চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে আগেও একবার অপারেশন হয়। তার আর্থিক অবস্থা এতটা শোচনীয় যে চিকিৎসা এবং ঔষধের খরচ চালাতে গিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। বিগত দেড় মাস বিভিন্ন ব্যক্তির সহায়তায় চিকিৎসা ও ঔষধ খরচ চালান।বর্তমানে তিনি খরচ চালাতে নিরুপায় এবং আরো একটি অপারেশন করতে হবে। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের মাধ্যমে তিনি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভারী (ক:) ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণাধীন যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তার অপারেশনের সামগ্রিক ভার যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড কর্তৃপক্ষ বহন করে।বর্তমানে তার অপারেশন সফল হলে তিনি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক) ট্রাস্টের নাম শুনে কৃতজ্ঞতায় আবেগান্বিত হয়ে পড়েন এবং যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান
জুলাই ২০, ২০২৫



অসহায় রোগীদের মাথার উপর ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট
Facebook চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের ২৬ নং ওয়ার্ড- হাত,পা ও হাঁড়ভাঙ্গা রোগীদের গগনভেদী আহাজারিতে ব্যাথাতুর এক পরিবেশ। বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার মানুষেরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পেতে জড়ো হন এখানে। এদের অনেকেই অপারেশনের নির্দিষ্ট তারিখে অর্থের অভাবে সময়মতো অপারেশন করাতে সক্ষম নন। অপারেশন সামগ্রীর উচ্চমূল্য আর অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে তাই তারা মাসের পর মাস হাসপাতালের বেডে কাটিয়ে দেন। এমতাবস্থায় শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট তাদের মাথার উপর ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের ব্যবস্থাপনায় গত ০৬ মে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াস্থ উত্তর ঘাটচেকের বাসিন্দা মো. আব্দুল্লাহকে অপারেশন সামগ্রী ক্রয়ে সহায়তা করা হয়। তিনি পেশায় একজন সিএনজি চালক। গত তিন মাস আগে একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ যাবৎ চিকিৎসার খরচ বহন করতে তিনি প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আব্দুল্লাহর মতো এরকম আরো অসংখ্য অসহায় রোগীর পাশে দাঁড়িয়েছে অত্র (ZWF) ফান্ড। কক্সবাজারস্থ পেকুয়ার ইবতেদায়ী মাদ্রাসার দরিদ্র শিক্ষক কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের সন্দীপস্থ দরিদ্র গৃহিণি জিয়াধন বেগম, রাঙ্গুনিয়ার ছোট্ট শিশু আরিফ ও তামিমসহ আরো অনেকে অত্র ফান্ডের এই সেবার আওতাভুক্ত হয়েছে। দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া এসব মানুষেরা যখন দুঃসময়ে আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী কিংবা ভিক্ষাবৃত্তি করে অন্যের নিকট হাত পাতে ঠিক সেসময় প্রয়েজনীয় ঔষধ ও অপারেশনসামগ্রী নিয়ে পাশ দাঁড়িয়ে মানবতার হাত প্রসারিত করেন, শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড নিবাসী মো. আলমগীর (৩৫)। চায়ের দোকান করে স্ত্রী ও দুই কন্যা নিয়ে সুখেই দিনাতিপাত করছেন। সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে কিছুদিন আগে অল্প জমি নিয়ে ঘরও নির্মাণ করেন। কিন্তু তার আর্থিক স্বচ্ছলতা পার্শ্ববর্তী কিছু মানুষের হিংসার কারণ হয়ে ডাকাতির শিকার হন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে একদল ডাকাত তার বাড়ি আক্রমণ করে। ডাকাতদের বাধা দিতে গিয়ে ভীষণ মারধরের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। পরদিন চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি হয়ে এ যাবৎ চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে নানান ধারদেনায় জড়িয়ে পড়েন। নিরুপায় হয়ে তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডের সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোবায়েত হাসানের মাধ্যমে শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন। গতকাল তার পায়ে রড প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। আর তার এই অপারেশনের ব্যয়ভার বহন করেন ফান্ড কর্তৃপক্ষ। অপারেশন পরবর্তী তার পরিবার ট্রাস্ট ও ফান্ড কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের ২৬ নং ওয়ার্ডে একজন দুস্থ রোগী মেজর অপারেশনের অপেক্ষায় আছেন বলে দায়িত্বরত চিকিৎসক #যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ডে অবহিত করেন। রোগীর সাথে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নাম্বার চাওয়া হলে মোবাইলের মতো ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সম্বলটুকু ওই রোগীর নেই বলে জানান। পরে রোগীর ভাই আব্দুল আজিজ আসলে তার সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে পারি। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার বড়হাতিয়ায়। গত ৩১ মে তার বড় ভাই মো. আব্দুল মালেক গাছ কাটতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় তার বুকের পাঁজর ও হাত ভেঙ্গে যায়। সময়মতো প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়ায় আল্লাহ্ রহমতে কিছুটা সুস্থ হন। বর্তমানে তার হাতের একটা মেজর অপারেশন প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু দিনমজুর আব্দুল মালেকের নিকট অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ যাবৎ বহু রোগীর পাশে যেভাবে আশ্রয় হয়ে দাঁড়িয়েছিলো যাকাত ফান্ড ঠিক সেভাবে তার প্রয়োজনীয় সকল #অপারেশন সামগ্রী জোগাড় করে দিয়েছে শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানটি। দুঃসময়ে এমন সহায়তা পেয়ে কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত হয়ে পড়েন রোগীর স্বজন।
জুন ৪, ২০২৫

শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট এর অর্থায়নে প্রদানকৃত ৩টি ডায়ালাইসিস মেশিন এবং ডায়ালাইসিস সরঞ্জাম হস্তান্তর ও ডায়ালাইসিস কার্যক্রমের উদ্বোধন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৭ নং নেফ্রোলজী ওয়ার্ডে ৪ জুন ২০২৫ বুধবার সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজী বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. নুরুল হুদা, শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট এর সচিব অধ্যাপক এ ওয়াই এমডি জাফর, এস জেড এইচ এম ট্রাস্টের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীমউদ্দিন, ডা. মোনায়েম ফরহাদ, মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিয়াসাদ শাহাবুদ্দিন, ইউরোলজি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মাইমুন রিদয়ান, ডা. ইব্রাহিম, ডা. মামুন, ডা. সামিউল করিম। অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমানে মোট জনসংখ্যার ১৬% মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কিডনী রোগে আক্রান্ত। এ বিপুল জনগোষ্ঠীর কিডনী রোগের চিকিৎসা ও ডায়ালাইসিস সেবা চলমান রাখা সরকারি হাসপাতালগুলোর একার পক্ষে সম্ভব নয়। আজকে ট্রাস্টের পক্ষ হতে প্রদানকৃত ৩টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মাধ্যমে প্রতিদিন আরো ২৫জন রোগী নতুন করে ডায়ালাইসিস করার সুযোগ পাবে। এতে করে চমেকের সক্ষমতা কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য ট্রাস্টের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টের প্রশাসিনক ও সমন্বয় কমকর্তা তানভীর হোসাইন, ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণাধীন যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড এর সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম আল মাসুদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. কামরুজ্জামান, ডা. কৌশিক ও সাইমন শুভ।
অনুষ্ঠানে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ৩টি ডায়ালাইসিস মেশিনসহ ১০০০ রোগীর ডায়ালাইসিস করার সরঞ্জাম যার মূল্যমান প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা চমেক পরিচালক মহোদয়ের হাতে তুলে দেয়া হয়।
মে ২৩, ২০২৫




উত্তরে- ভারতের মেঘালয় প্রদেশে অবস্থিত সুনামগঞ্জ সদর। সম্ভাবনাময় অথচ পশ্চাৎপদ হাওড়-বাওরে ভরপুর এ উপজেলা। ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের (খাসিয়া/জৈমত্ম্ অংশ) পাদদেশে অবস্থিত যা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি অপরূপ সৌন্দর্যে ও পাখীর কলরবে মুখরিত। উত্তরাংশে উঁচু ভূমি আর নিমাংশে হাওড় এই উপজেলাকে দিয়েছে এক বৈচিত্রময় সৌন্দর্য। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান ছাড়াও হাজং, গারো, মনিপুরি, ত্রিপুরা সহ কয়েকটি উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন পাহাড়ের পাদদেশে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সাথে বসবাস করে।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম জনপদ লক্ষীপুর ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চয়তার লক্ষ্যে শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান যাকাত ওয়েলফেয়ার ফান্ড এর ব্যবস্থাপনায় “হযরত গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী (ক.) দাতব্য চিকিৎসালয়” নামে একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়। এ কেন্দ্র হতে নিয়মিতভাবে বিনামূল্যে ঔষধসহ চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি সুন্নতে খতনা ক্যাম্প পরিচালিত হয়ে থাকে।
গতকাল ২২ মে ২০২৫ বৃহস্পতিবার সুনামগজ্ঞ উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব অরূপ রতন সিংহ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: শফিকুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
পরিদর্শন কালে উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব অরূপ রতন সিংহ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের চিকিৎসা সেবাসহ সার্বিক বিষয়ে খোজঁখবর নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, পুষ্টি ও চিকিৎসাসেবা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে ‘শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক) ট্রাস্ট’ সর্বজনীন বিনামূল্যে স্বাস্থসেবা কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দরিদ্র অসহায় রোগীদের মানসিক, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভিন্ন সহায়তার পাশাপাশি রোগীর মানসিক শক্তি বৃদ্ধি ও চিকিৎসার ব্যয় বহন করে এ ট্রাস্ট মানব সেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।’
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় পর্ষদের সম্মানীত সদস্য, গোলাম হোসেন, চামতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুল হক মাস্টার, ইউপি সদস্য আহসান হাবীব, হারুন অর রশিদ,নুরুল আলম, নূর মোহাম্মদ , মোহাম্মদ শাহআলম, আলকাছ মেম্বার, ফুল মিয়া, নুরু, শমছের আলী, বিল্লাল মিয়া, ছিদ্দিকুর রহমান, আজর আলী, ফারুক মিয়া, আব্দুল মালেক, আজাদ হোসাইন প্রমুখ।
আর্তমানবতার সেবায় আপনার যাকাত প্রদান করতে বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়সহ যে কোনো ব্যাংকিং অ্যাপ থেকে স্ক্যান করুন।
